মোবাইল ফোনের ১০ টি ক্ষতিকর দিকগুলো

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে ক্ষতির দিক নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহারে শরীর ও মানসিক নানান সমস্যায় পড়েছে ব্যবহারকারীরা।

মোবাইল-ফোনের-ক্ষতিকর-দিকগুলো
আধুনিক যুগে প্রযুক্তিবিদদের  বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে মোবাইল ফোনের নানান ক্ষতিকর দিকসমূহের কথাগুলো। 

পেজ সূচিপত্রঃ মোবাইল ফোনের ১০ টি ক্ষতিকর দিকগুলো   

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে  ঘাড়ে ব্যথা 

দীর্ঘ সময় মাথা ঝুঁকিয়ে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে দেখা দিয়েছে ঘাড়ের ব্যথার সমস্যা। অতিরিক্ত গেমে আসক্তি, স্কিনের দিকে তাকিয়ে থেকে ভিডিও দেখা সোশ্যাল মিডিয়ায় মনোযোগ দিয়ে বেশি সময় তাকিয়ে থাকা। স্কিনের দিকে ঝুঁকে থাকার কারণে ঘাড়ের ব্যথা হয়।

আরো পড়ুনঃ ভিডিও না বানিয়ে ইউটিউব থাকে ইনকাম করার উপায়

দেখা যায় যে মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঝুঁকে থাকার কারণে ঘাড়ে ব্যথা দেখা দেয়। এর কারণে যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঠিক দূরত্ব বা বডির পজিশন ঠিক রেখে ব্যবহার করা ঠিক /উচিত। 

চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করা

গবেষকদের মতে এ বিষয়টি নিয়ে দেখা যায়। যে দীর্ঘ সময়ে মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হয়। ও এক ধরনের জিনগত সমস্যা দেখা দেয়। মোবাইল ফোনে মাত্রা অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে দৃষ্টিহীনতার কারণ হতে পারে। চক্ষু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। মোবাইলের নীলাভ আলো চোখের রেটিনা দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মাধ্যমে অন্ধত্বের কারণ হতে পারে।

মোবাইল-ফোনের-ক্ষতিকর-দিকগুলো
স্কিনের ফস্ট সাইজ বড় করে, চোখ থেকে অন্তত ১৬ ইঞ্চি দূরে রেখে এবং একটু পরপর ২০ সেকেন্ডের জন্য স্কিন থেকে চোখকে ফিরিয়ে সবুজ গাছের দিকে তাকানোর মাধ্যমে এই সমস্যা কমিয়ে আনার সম্ভব। আর সব সময় মোবাইলের স্ক্রিনের ব্লাইটনেস কমিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন তাহলে চোখের দৃষ্টি কিছু ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবে। 

মোবাইলে দীর্ঘ সময়ে কথা বলা কানে কম শোনা 

এখন দেখা যায় অনেকেরই কানে কম শোনার সমস্যা। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইলে দীর্ঘ সময়ে কথা বলা, উচ্চ আওয়াজে গান শোনা এবং কানে হেডফোন গুজিয়ে রাখার মাধ্যমে শ্রাবণ শক্তি হাস পাওয়ার কারণ। এখন দেখা যায় ১৮ থেকে ২৫ বছরের বয়সের কানে কম শোনার সমস্যার একটাই কারণ মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত ব্যবহার। দৈনিক দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি মোবাইল ব্যবহার করলে বা তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে কানের সমস্যা দেখা দিবে।

আরো পড়ুনঃ ফেসবুক মনিটাইজেশন করতে কি কি শর্ত লাগে 

এখন রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে কানে হেডফোন লাগিয়ে যাত্রাপথে চলাচলে এর প্রতিনিয়ত এই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সাউন্ড গান শোনা। হেডফোনে গুজিয়ে অতিরিক্ত সাউন্ড দিয়ে গান শোনা। এর মূল একটাই কারণ সমাধানের হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ কথা না বলা। 

শুক্রাণু কমে যাওয়া

ফোন থেকে নিগত হওয়া হাই ফ্রিকোয়েন্সীর ইলেক্ট্রা- ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন শরীরের বিভিন্ন কোষ ও পুরুষের প্রজনন তন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে শুক্রাণুর ঘনত্ব কমে যায়। পুরুষের বন্ধুত্বের কারণ হতে পারে দাবী করছে বিভিন্ন গবেষকরা। 

 মোবাইল ফোন ব্যবহারের পরে পকেটেবা জামার সাইট পকেট বা প্যান্টের পকেটে রেখে দেওয়ার সময় মোবাইল যথেষ্ট উত্তাপ্ত থাকার ফলে এটি অন্ডকোষের চারপাশে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণ হয়। যার ফলে মানুষের শুক্রাণু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর জন্যে পকেটে রাখলে শরীরের স্পর্শ পাই। এর জন্যে মোবাইল ফোন আমাদের অঙ্গের কাছে না রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। 

অস্থি-সন্ধি গুলোর ক্ষতি  

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের স্কিনের ট্যাব ক্লিক  ও সোয়াইপের পরিমাণ গড়ে ২০০৬১৭ বার এবং সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪২৭ বার। এই দীর্ঘক্ষণ স্কিনের টাইপিং এর ফলে আঙ্গুলের জয়েন্টে ব্যথা হয়। 

দেখা যায় যে এর ফলে অথরাইটেসের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। এছাড়াও দেখা যায়। যে বসার ভঙ্গি গা-কানের মাঝামাঝি ফোন রেখে কথা বলা এবং অতিরিক্ত ঝুমকে দীর্ঘক্ষণ সময় মেসেজ টাইপিং করা বিভিন্ন ধরনের শরীরের সমস্যা ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

আরোও পড়ুনঃ কিভাবে বাংলাদেশে একজন ছাত্র অর্থ উপার্জন করতে হয় 

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ তাহলে সে বেশি সময় ধরে মেসেজ টাইপিং না করা। মোবাইলের সঠিক ব্যবহারের পরামর্শ দেন।

নেমোফোবিয়া 

অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার কারণে মনের মধ্যে সব সময় মোবাইল আছে কিনা নাকি হারিয়ে গেল এমন একটি ভয় তৈরি হয়। এমন রোগের নামই হলো নেমোফোবিয়া তথা নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া বলা হয়। বিশ্বের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও ভারতের তরুণেরা ৫৩ ও ২৯ শতাংশ এই রোগের শিকার হয়ে আছে। 

এছাড়াও দেখা যায় যে মোবাইলের অতিরিক্ত মাত্রা ব্যবহার করার কারণে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এবং অন্যান্য কাজের ওপর প্রভাব দেখা দেয়। এই রোগের একটাই মুক্তি লাভ হলো মোবাইল পরে ফোনের নির্ভরতা যথাসময়ে কমিয়ে আনতে হবে। এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার মোবাইল ফোন কম ব্যবহার করা। 

মোবাইল ফোনে হঠাৎ রিংটোন শোনা 

হঠাৎ মোবাইল ফোনের রিংটোন উচ্চমাত্রায় বেজে ওঠার কারণে মানুষের অনেক সমস্যায় হতে পারে। মনের উদ্দিগ্ধতা ও বিষণ্যতা থেকে মাত্রা অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারকারী আকস্মিক ভাবে রিংটোন ও ভাইব্রেশন বেজে ওঠা শব্দ শুনতে পায়।

আরোও পড়ুনঃ এআই  দিয়ে কিভাবে কাজ করে 

ব্যবহারকারীরাই অতিরিক্ত মাত্রা মোবাইলের ব্যবহার করে থাকেন এমন সমস্যা হয়ে থাকে। তাই অতিরিক্ত কিছুই ভালো না। তাই যত সম্ভব আমাদের মোবাইল থেকে দূরের থাকা প্রয়োজন।অতি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ব্যবহার করা নিষিদ্ধ । 

মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া 

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। এর সাথে সাথে অস্থিরতা ও অমনোযোগীতা বৃদ্ধি পায়। এর কারণে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা সহজেই সমস্যা উপলব্ধি করতে পারে না। এর কারণে দেখা যায় নিজের অজান্তেই অন্যের সাথে অশোভনীয় আচার-আচরণ করে ফেলে। এই সমস্যার সমাধান পরিলক্ষিত হল অতিরিক্ত মোবাইল ফ্যান ব্যবহার করা কমিয়ে আনতে হবে। 

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে চিন্তা শক্তি কমে যায় 

মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে দেখা যায়। মানুষের তড়িৎ চিন্তা শক্তি কমে যায়। সৃজনশীলতা মেধা কমে যাওয়ার ফলে কোন কিছুরই উদ্ভাবনী ও ক্ষমতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা স্কুল পড়ুয়া স্টুডেন্টেরা বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা ও নকলের আশ্রয় নেওয়ার ফলে দিন দিনই মেধাবী ছাত্ররা নৈতিকতা অবস্থা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাই এদের চিন্তাশক্তি দিনে দিনে হ্রাস পাচ্ছে।

আরো পুড়নঃ  স্টুডেন্ট অনলাইন ইনকাম ছাত্র জীবনে অভিজ্ঞতা ছাড়াই আয় করার উপায়

মোবাইল ফোনের গেম ও সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন গেম এগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে শিশু কিশোররা পানাহার ও দৈনিক কাজকর্মের অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। 

মোবাইল-ফোনের-ক্ষতিকর-দিকগুলো
জাপানের এক ডকুমা ফাউন্ডেশন এর পাঁচটি দেশে জরিপে দেখা গেছে 70% শিশু পরিবার ও সমাজ থেকে বিষন্নতার কারণ হিসেবে মোবাইল ফোনই দায়ী। তাই নির্দিষ্ট বয়সের আগে কোনোভাবেই শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দেওয়া ঠিক না। 

অনেক সময় দেখা যায় যে শিশুদের কান্না রাগ ভাঙ্গাতে অভিভাবকেরা মোবাইলে কার্টুন বা গান বাজিয়ে দেয়। এতে দেখা যায় যে পরবর্তীতে প্রকট সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। মোবাইল না দিলে পরবর্তীতে আর কোন কথাই শোনে না।  

পর্নো-আসক্তি

মোবাইল ফোন সুলভ দিয়ে হওয়ায় বর্তমান সব বয়সী মানুষের কাছে এটা সহজলভ্য হয়ে পড়ে। এসব কারণে বিভিন্ন ধরনের অর্থনীতির কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। সাংস্কৃতির ফলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তরুণেরা পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি হয়ে পড়েছে। 

মোবাইল ফোনে আসুক তো তার কারণে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে এর পিছনের রয়েছে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং ফলস্বরূপ পর্নোগ্রাফি আসক্তির অন্যতম কারণ। তাই এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতে শিশু কিশোরদের পর্যন্ত মনিটরে রাখতে হবে। রাজধানী ঢাকার ৭৭ শতাংশ স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে পর্নোগ্লাফি আসক্তি তৈরি হয়েছে। 

মোবাইল ফোনের অন্যান্য ক্ষতিকর দিক 

  • শিশু কিশোর ও পারিবারিক মূল্যবোধ বিনষ্ট মা-বাবার উপদেশ না মানার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। 
  • মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত সেলফি তোলার কারণে সেলফি দিস নামে নতুন একটি মানসিক রোগ সৃষ্টি হয়েছে। 
  • স্মার্টফোনের ব্যবহারের ফলে ঘুমের সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। 
  • আমেরিকার ক্যান্সার সোসাইটির ওয়েবসাইটে তথ্য মতে মোবাইল ফোনের ড্রেন মাথা গলা টিউমারের কারন হতে পারে। 
  • দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের স্মৃতিশক্তি ও হার্টের উপর প্রভাব ফেলতে পারে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। 

লেখক এর শেষ কথা 

মোবাইল ফোনে যেসব ক্ষতি করে অতিরিক্ত সেটিং এর ফলে ঘুমের মধ্যে এর প্রভাব পড়তে পারে। চোখের সমস্যা যদি কমে যাওয়া। কানে কম শোনা। শরীরের মধ্যে অসুস্থতা। ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষতির কারণ হচ্ছে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে তাই প্রয়োজনের বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত না ।বেশিক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করার পরে শরীরের স্পর্শের থেকে দূরে রাখা। কলেজে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের বেশি মোবাইল ফোন ইউজের কারণে পড়াশোনার ক্ষতি। কোন জিনিস প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাত্রা ব্যবহার করা মানেই ক্ষতি। তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ব্যবহার না করা। এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পপুলার ড্রিম আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url