কিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায়

পেটের চর্বি বা ভুড়ি কমানোর জন্য খাদ্য পরিবর্তন আনার পাশাপাশি ব্যায়াম ও দরকার। আসুন জেনে নিই কিভাবে এটা কমানো যায়। মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার, উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার বাদ দিন, যেমন কোমল পানীয় চিনি যুক্ত খাবার, কেক পেস্ট্রি, চকোলেট ইত্যাদি।

কিভাবে-পেটের-চর্বি-কমানো-যায়
আমিষ জাতীয় খাবার আশযুক্ত খাবার বেশি করে খান।সবুজ শাকসবজি তাজা ফলমূল খেতে হবে বেশি করে।স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন অভ্যাস হলে সহজেই মেদ কমিয়ে ফেলা সম্ভব। 

পেজ সূচিপত্রঃকিভাবে পেটের চর্বি কমানো যায় 


পেটের চর্বি কমানো উপায়
কিভাবে-পেটের-চর্বি-কমানো-যায়

প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস লেবু পানি দিয়ে দিন শুরু করুন। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।এটি কেবল শরীরকে হাইড্রেট করে না।গরম হজমেও সহায়তা করে।আপনার সিস্টেমকে ডিটক্সাইফাই করে।দ্রুত চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।ওজন কমাতে বেশি ভালো ফলাফল দেয়।

আরে পড়ুন ঃকিসমিস খাওয়ার ১০টি উপাকারিতা

ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারকে অগ্রধিকার  দিন 

সকালের নাস্তা ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে ওজন দ্রুত কমবে। শস্য ফলমূল শাক সবজি বেছে নিন। ফাইবার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। পেট ফোলাভাব কমায় পেটের চর্বি পোড়াতে সাহায্য করে।   

করলার রস পান করুন 

পেটের চর্বি ও ভুড়ি কমাতে করলার রস খুব বিখ্যাত। করলার রস খুব তেতো 

যা পানকরা খুব শক্ত তবে আপনি যদি সকালে করলার রস পান করেন এবং খালি পেটে প্রতিদিন এক গ্লাস পান করেন তবে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে আপনি আপনার পেটের মেদ কমাতে থাকবে।মনে রাখবেন যে কোন কিছু খাওয়ার আগে আপনাকে প্রতিদিন করলার রস খেতে হবে। 

পর্যাপ্ত পানি পান 

ওজন কমানোর মূল চাবিকাঠি হল পর্যাপ্ত পানি পান। নিজেকে আদ্র রাখার পাশাপাশি এটা  অস্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা কমানো। খাবারের আগে পানি পান অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে ফলে পেটের চর্বি জমা হওয়ার ঝুঁকিও কমে।

গরম পানিতে লেবু   

সকালে এক কাপ ঘন কফি বা চা মন মেজাজ ভালো করে দেয় ঠিকই। কিন্তু যদি ওজন কমাতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে গরম পানিতে লেবুর রস পান করুন 

কাডিও ব্যায়াম আর স্ট্রোংঘ ট্রেনিং করুন 

 করতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। পেটের মেয়েদের জন্য স্কোয়াট ও খুব কার্যকর। যা শুধু পেটের মেদ কমানোর লক্ষ্য নিয়ে সাজানো। কিছু যোগ ব্যায়ামও ভালো কাজ করে ভুরি কমাতে। এজন্যই সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম যেমন  দ্রুত হাঁটা বা সাইকেলিং অথবা 75 মিনিট ভারী ব্যায়াম যেমন দৌড়ানো বা খেলা এরকম পরামর্শ দেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা।   

খাবারের পেলেটে পর্যন্ত আমিষ রাখা 

সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান চর্বিযুক্ত আমিষ খাবার খুবই প্রয়োজন। দিনে প্রতি বেলার খাবারে ২০ থেকে ৩০ গ্রাম আমিষ খেতে হবে। আবার প্রাণিজ আমিষ দিনে বেশি না খেলেই ভালো। ননিমুক্ত দুধ ও ডিম রাখতে হবে ডায়েটে। 

যথেষ্ট ঘুম যেন হয় তা খেয়াল রাখুন 

রাতে ঘুম ভালো না হলে দিনে দিনটাই মাটি হয়। রাত জাগা পাখিদের জন্য দুঃসংবাদ হল। এতে পেটে মেদ জমে গবেষণারা বলে, দিনে অন্তত পাঁচ ঘণ্টা ঠিকঠাক ঘুম না হলে  ভিসেরাল ও সারকিউটেনিয়াস দুই ধরনের চর্বি বাড়ে ফলে পেটে যেমন মেদ জমে তেমনি রক্তের কোলেস্টরল বা লিভারের ফ্যাটও বৃদ্ধি পায়।

লেখ রিস 

সোজা হয়ে মেঝেতে শুয়ে পা দুটো উপরে তুলে দিন। হাত দুটো সোজা পাশে থাকবে। এবার নিঃশ্বাস নিতে নিতে পা দুটো অবস্থায় নিচে নামান।তবে পা দুটো মেঝেতে লেগে যাবে না । আপনার পায়ের সঙ্গে মেঝের কিছুটা দূরত্ব থাকবে। ওই অবস্থা নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আবার পা দুটো ৯০ ডিগ্রির ওপরে তুলে দিন। আবার নিচে নামান। মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত মেঝেতে লেগে থাকবে। এভাবে ১২ বার ব্যায়াম তলপেট এর মেদ কমানোর জন্য খুবই উপকারী। 

ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং

পেটের চর্বি কমানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায় গুলির মধ্যে একটি হতে পারে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং।এটা বিশ্বজুড়ে বহু আলোচিত একটি ডায়েট প্ল্যান। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এটা ওজন এবং পেটের চর্বি কমানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় গুলির মধ্যে একটি 

মেয়েদের মেনোপজে

নারীদের পিরিয়ড স্থায়ীভাবে বন্ধের ১২ মাস পর থেকে মেনোপজ শুরু হয়।,সাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর, কখনো কখনো ৪০ থেকে ৪২ বছর বয়সেও হতেও নারীদের পিরিয়ড বন্ধ হয়ে আসার ঘটনা ঘটে থাকে। মেনোপজের সময় পেটের চর্বি হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার 

স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন 

মেদ বা ভড়ি কমাতে স্বাভাবিক জীবন যাপন কোন বিকল্প নেই। স্বাভাবিক জীবনযাপন করলে আপনার মন ও শরীর ভালো থাকবে। ধুমপান করা থেকে বিরত থাকুন। সময় মত খাবার গ্রহণ করুন। বাহিরের কলা খাবার খাবেন না । অতিরিক্ত খাবার খাবেন না নিয়মিত হাঁটা-হুটি করেন। পরিশ্রম করুন আশা করি আপনার সকল সমস্যা ভালো হয়ে যাবে। 

রোজা রাখা

ওজন কমাতে রোজা রাখা খুব সহজ উপায়। এজন্য আপনাকে প্রতি সপ্তাহে ১ থেকে ২ রোজা রাখতে হবে। আপনি যদি সপ্তাহে একদিন রোজা রাখেন তবেও আপনি আপনার চর্বি অনেকাংশই হ্রাস করতে পারবেন। আমি বলব এটা অত্যন্ত কঠিন তবে আপনি যদি আপনার চর্বি হ্রাস করতে চান তবে আপনাকে এটা করতেই হবে। 

শস্য জাতীয় খাবার 

শস্যজাতীয় খাবার আঁশ সমৃদ্ধ। এটা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্ষুধার্ত ভাব  কমাতে ও উচ্চ ক্যালোরি বহুল খাবারের চাহিদা কমাতে সহায়তা করে। উচ্চ আর সমৃদ্ধ শস্য ওজন কমায় এবং পেটের মেদ কমাতেও সহায়তা করে। 

গ্রিন টি 

গ্রিন টিতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা পেটের মেদ কমাতে খুব বেশি কার্যকর। তাই দুধ ও চিনি বেশি দিয়ে চা পানের অভ্যাস বদলে নিন  গ্রিন টিতে।


ঝাল খাবার খান  

ঝাল খাবার খান পেটের মেদ কমে যাবে। অবাক হচ্ছেন অবাক হবেন না। ঝাল খাবেন কিন্তু সেই ঝাল আসবে দারুচিনি, আদা গোল মরিচ, এবং কাঁচা মরিচ থেকে। এসব রান্নায় ব্যবহার করুন। এই মসলা স্বাস্থ্যকর ও পেটের চর্বি  কমাতে কার্যকর।

কাঁচা রসুন  

কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া সকালবেলা চুষে খান। এই অভ্যাসের ফলে দ্রুত আপনার ওজন কমে যাবে পেটের মেদও কমে যাবে । কাঁচা রসুন শরীরের রক্ত প্রবাহ সহজ করে পেটের চর্বি  জমতে দেয় না। 

ভিনেগার মেশানো গরম জল

গরম জলে সামান্য অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে সেই জল নিয়মিত পান করলে অল্প দিনেই পেটের চর্বি কমবে। খাবার হজম হয় ও ভিনিগার মেশানো জল খেলে। 

পেটের ব্যায়াম করুন 
কিভাবে-পেটের-চর্বি-কমানো-যায়

পেটের চর্বি কমাতে শুধু কার্ডিয়ো করলেই হবে না পেটের ব্যায়াম করতে হবে । প্ল্যাস্ক  করা প্রয়োজন। শুধু স্পট  রিডাকশনে কোনও লাভ হবে না তা এখন প্রমাণিত। তবে পেটের মাংসপেশিগুলো ট্রেন করে টানটান করার জন্য   পেটের ব্যায়ামের বিকল্প নেই 

শেষ কথা ঃ

ওজন কমানো একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, যা সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। সঠিক খাদ্যভাস নিয়মিত ব্যায়াম, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে  চললে আপনি অবশ্যই চর্বি কমাতে সফল হবেন। নিজেকে সময় দিন এবং লক্ষ্য রাখুন ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনুন এবং নিজের প্রতি সদয় থাকুন আপনাদের সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পপুলার ড্রিম আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url