২০২৫ সালের রমজান ও ঈদ কত তারিখ
পবিত্র রমজান মাসের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। ২৮শে ফেব্রুয়ারি রমজানের চাঁদ দেখা যাবে এবং পয়লা মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান।
পেজ সূচিপত্রঃ ২০২৫ সালের রমজান ও ঈদ কত তারিখ
- ২০২৫ সালের রমজান কত তারিখে শুরু হবে
- রমজানের ইতিহাস ও গুরুত্ব
- লাইলাতুল কদর শক্তির রাত
- রমজানের বদ অভ্যাস থেকে মুক্তি
- যাকাত আল ফিতর পুরস্কারের মাস
- ইফতার
- আযান:আল্লাহর কাছে প্রার্থনা
- ইসলামের পাঁচটি স্তর
- ২০২৫ সালের শবেবরাত রমজান শবে কদর ও ঈদ কবে
- ২০২৫ সালে রমজানের ঈদ কত তারিখ
- রমজান মাসের ফজিলত
- লেখকের শেষ কথা
২০২৫ সালের রমজান কত তারিখে শুরু হবে
আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবে পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যাবে। দেশটিতে আগামী মার্চ মাসের ১ তারিখ শনিবার শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান মাস।
সাধারণত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে একদিন পর বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশির ভাগই দেশে রমজান মাস শুরু হয়। সে হিসাবে এ বছরের ২ মার্চ রবিবার প্রথম রোজা পালন করবে বাংলাদেশের মুসল্লিরা।
সম্ভবত এ বছরের রমজান মাস ২৯ দিনে হবে। সে হিসাবে রমজানের শেষ দিন হবে আগামী ২৯ শে মার্চ।
আরো পড়ুনঃ শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
১৪৬ হিজরী সনের রমজান মাসের চাঁদটির জন্ম হবে শুক্রবার অর্থাৎ (২৮ শে ফেব্রুয়ারি) রাত তিনটা ৪৪ মিনিটে। ওইদিনের সন্ধায় সূর্যাস্ত 32 মিনিট পর্যন্ত ৪টি আকাশে অবস্থান করবে বলেও জানান।
আবহাওয়াবিদরা জানান এবছরের রমজান মাসটি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে শেষ হবে শীত মৌসুমের। রমজানের প্রথম দিনটি হবে বসন্তে। ফলে তুলনামূলক ঠান্ডা থাকবে রোজার দিনগুলো। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব সংযুক্ত আরব আমিরাত কুয়েত মিশর কাতারে মুসলমানদের প্রায় ১৩ ঘণ্টা করে রোজা রাখতে হবে।
রমজানের ইতিহাস ও গুরুত্ব
রমজান সারা বিশ্বের মুসলমানদের দ্বারা পালন করা উপবাস এবং ত্যাগের মাস হিসাবে বিবেচিত হয়। রমজান শব্দের মূল আরবি শব্দ রামিদা বা আর-রামাদ যার অর্থ সূর্য-বেকড গ্রাউন্ড এবং প্রর্চড তৃষ্ণা। ইসলামী ক্যালেন্ডারের নবম মাসে এটা উদযাপন করা হয়। সময়কালে মুসলমানেরা মোহাম্মদকে সম্মান জানাতে এবং আত্মা নিয়ন্ত্রণ অর্জনের জন্য সূর্যোদয় থেকে সূর্য অস্ত পর্যন্ত উপবাস করে। এটি সেই সময় যখন মুসলমানেরা তাদের অভ্যন্তরীণ আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে এবং আত্মার সংযম এবং শৃঙ্খলার উপর মনোযোগ দেয়।
লাইলাতুল কদর শক্তির রাত
লাইলাতুল কদরের রাতে কুরআনের প্রথম আয়াত নাজিল হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। ইসলামী উৎসবকে ধার্মিক বলে মনে করা হয় কারণ এই এক রাতে সংঘটিত সমস্ত নেক আমল হাজার বছর ধরে সম্পাদিত কর্মের চেয়েও উত্তম। মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের উৎসব ও পালিত হয়। উপবাস শুধুমাত্র খাবারের জন্য নয় এতে যে কোন তরল ধূমপান এবং অন্যান্য অনুপযুক্ত ক্রিয়াকলাপ পরিহার করাও অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহর নামে খাদ্য ও পানীয় ত্যাগ করা তাদের ঈমান অর্জনের সহায়তা করে। এবং তাদের প্রভু আল্লাহর নিকটবর্তী করে।
রমজানের বদ অভ্যাস থেকে মুক্তি
রমজানের উৎসব হল আত্ম নিয়ন্ত্রণের উদযাপন এবং আপনাকে একটি সুস্থ জীবন যাপন করতে সহায়তা করে। এটি আপনাকে কেবল আপনার আত্মাকে শুদ্ধ করতেই দেয় না কিন্তু শারীরিক শরীরকেও। এছাড়াও এই মুসলিম উৎসবের কারণে একজন ব্যক্তি অভাবনীয় লোকদের সাথে আরও বেশি সময় কাটাতে এবং তাদের প্রকৃত কষ্ট বুঝতে পারে। তাই মুসলমানদেরকে বিশ্বাস ও ভক্তি সহকারে রোজা রাখতে এবং তাদের শরীর মন ও আত্মাকে দয়া ও উদারতার সাথে পরিষ্কার করতে উৎসাহিত করা হয়।
যাকাত আল ফিতর পুরস্কারের মাস
ইসলামের পবিত্র রমজান মাসের শেষ যে দান করা হয় তা যাকাতের আলফিতর নামে পরিচিত। কথিত আছে যে এই কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে মুমিনদের অন্তর থেকে লোক দূর হয়ে যায়। অতিরিক্ত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণকারী প্রত্যেক মুসলমানকেই আবশ্যক যাকাত আল ফিতর প্রদান করতে হবে। এর পাশাপাশি কিছু মুসলমান রমজান মাসে যাকাত প্রদান কে ভালো কাজ করার পুরস্কার হিসেবে পছন্দ করে। পরিবারের প্রধান তাদের সন্তান ও চাকর এবং অন্যান্য অভাবী ও আত্মীয়-স্বজনদের যাকাত দিতে পারে।
ইফতার
সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মুসলমানেরা সারাদিন রোজা রাখে। কিন্তু ইফতারের সময় তারা তাদের টেবিলে জামকালো খাবার এবং সুস্বাদু খাবার খায়। পুরো পরিবার উপবাস ভাঙতে একসাথে বসে যা এটিকে আরো বিশেষ করে তোলা। এই ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে তাদের বন্ধন অটুট থাকে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পায়।
আরে পড়ুন ঃ সজনে পাতার উপকারিতা কি
আযান:আল্লাহর কাছে প্রার্থনা
মুসলিম ধর্মের লোকদের নামাজের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় প্রতিদিনের প্রার্থনার মাধ্যমে যা আযান। দিনের নির্ধারিত সময়ে একজন মোয়াজ্জিন দ্বারা আযান দেওয়া হয়। আযানের সময় মোয়াজ্জিন তাকবীর ও কালেমা পাঠ করে।
ইসলামের পাঁচটি স্তর
রমজান মাসে একটি সকালের খাবার ইফতারের সন্ধ্যায় খাবারের সাথে মিল রাখতে ফরজের নামাজের আগে সেহরি খাওয়া হয়। রমজানের রোজায় কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতরাং অমুসলিম জনগণ রোজাদারের মুসলমানদের অনুভূতিকে সম্মান করবে এবং রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখবে।
২০২৫ সালের শবেবরাত রমজান শবে কদর ও ঈদ কবে
২০২৫ সালের শবে বরাত রমজান শবে কদর ঈদ ও হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধানগুলি কবে কত তারিখ পালন করতে হয় জেনে রাখার সুবিধার জন্য এখানে সম্ভবত তারিখ তুলে ধরা হলো।
- শবে বরাত ১৫ ই ফেব্রুয়ারি শনিবার
- বিশ্ব ইজতেমা ৩১ শে জানুয়ারি থেকে ২ এ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ৭ থেকে ৯এ ফেব্রুয়ারি
- রমজান ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৯ শে মাস শেষ হতে পারে (শাবান মাসের শেষে রমজানের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।)
- জুম্মাতুল বিদআত ২৮ শে মার্চ (শুক্রবার )
- শন-ই-কদর -২৭ এ মার্চ (বৃহস্পতিবার )
- ঈদুল ফিতর ৩০ অথবা ৩১ শে মার্চ (সোমবার চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে)
- ঈদুল আযহা ০৭ জুন (শনিবার চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে)
- হজ-চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে পাশে জুন থেকে শুরু হতে পারে।
- আশুরা ৬ জুলাই (রোববার )
- ঈদে মিলাদুন্নবী পাশে সেপ্টেম্বর (শুক্রবার )
রমজান ঈদ হজ্ব শবে বরাত শবে কদর শবে মেরাজ আশুরা দিনগুলি মূলত চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে। ইসলামিক ক্যালেন্ডার এর প্রত্যেক মাসে শুরুর তারিখ চাঁদ দেখার সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়। এখানে ক্যালেন্ডারের উল্লেখিত সরকারি ছুটি সম্ভবত তারিখের ভিত্তিতে রমজান ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ ইবাদতের দিনগুলি তুলে ধরা হয়েছে। আরবি মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তন হতে পারে।
২০২৫ সালে রমজানের ঈদ কত তারিখ
সিয়াম সাধনার পরে আসে ঈদুল ফিতর যা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের দিন। রমজান শেষে পুরো বিশ্বের মুসলমানদের ঈদ পালন করেন।
২০২৫ সালের রমজান শুরু হতে পারে একে মার্চ থেকে। সেই হিসাবে রমজান শেষে শাওয়ালের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২০২৫ সালের রমজান ঈদ পালিত হবে ৩১ শে মার্চ সোমবার।
২৯ দিনের হলে ঈদুল ফিতর পালন করা হবে 30 শে মার্চ। আর রমজান 30 দিন হলে ঈদুল ফিতর পালন করা হবে ৩১ শে মার্চ
রোজার ঈদ বা ঈদুল ফিতর কবে হবে তা মূলত চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে। ইসলামিক ক্যালেন্ডার এর প্রত্যেক মাস শুরুতে তারিখ চাঁদ দেখার সাপেক্ষে নির্ধারিত হয়।
এই আর্টিকেলে calendar এর উল্লেখিত সরকারি ছুটির সম্ভাবনা তারিখের ভিত্তিতে ২০২৫ সালের রমজানের ঈদ সম্ভাবনা তারিখ তুলে ধরা হয়েছে।
রমজান মাসের ফজিলত
রমজান হচ্ছে সকল মাসের সেরা মাস আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরীফে বলেছেন রমজান এক মহিয়া মহ ও গৌরব মন্ডিত মাস। এ মাসে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব আল কোরআন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর উপর নাজিল হয়েছে।
আরো পড়ুন ঃ প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়
প্রত্যেকটি মাসের তুলনায় এ মাসের ইবাদত আল্লাহতায়ালার কাছে ৭০ গুণ বেশি পরিমাণ সওয়াব বাড়িয়ে দিয়েছেন। রমজান মাসের একটি রাত থেকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ রাত হিসেবে আমাদের মাঝে দিয়েছেন। সেই রাতটি হল রমজানের শেষ বেজোড় রাতের কথা বলা হয়েছে। আমরা সকলেই যেটা মনে করি ২৭শে রমজান সেই দিনটিকে বলা হয়। ২৭ শে রমজান লাওহে মাহফুজ থেকে আল্লাহতালা এই পৃথিবীতে কোরআন নাজিল করেছেন যার জন্য এই রাতে সর্বশ্রেষ্ঠ রাত হিসেবে ও গণনা করা হয়েছ।
আমাদের জীবনের ১হাজার বছর আমল করে যে নেকি অর্জন করতে পারবেন লাইলাতুল কদর রাতে আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে তাকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে যদি সারারাত ইবাদত করি তাহলে ১হাজার বছর আমল করার সমান নেকিন অর্জন করতে পারবেন।
লেখকের শেষ কথা
২০২৫ সালের রমজান ও ঈদুল ফিতর সবই নির্ভর করে চাঁদ দেখার উপরে। তারপরেও সম্ভাবনা কিছু ডেট রয়েছে। আজ রাত্রি থেকেই রমজান মাস শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তবে ও চাঁদ দেখার উপর। এতে ২৯ টি রোজা হলে ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে ৩০ শে মার্চ। ৩০ রোজা পূর্ণ হলে ৩১ শে মার্চ ঈদুল ফিতর অনুষ্ঠিত হবে। সবকিছুই নির্ভর করে চাঁদ দেখার উপরে।
আমাদের আলোচনা ছাড়া কোন প্রশ্ন কিংবা মতামত থাকলে আমাদের কমেন্টে জানাতে পারেন। আমরা আপনার সঠিক উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব ধন্যবাদ
পপুলার ড্রিম আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url